ঢাকা , বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫ , ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
একটি দল সম্পর্কে লিখছেন না, সাংবাদিকদের মির্জা আব্বাস আবারও শাহরুখ-মাধুরী জুটিকে দেখতে চায় দর্শক! সমালোচনার জবাব দিলেন প্যারিস জ্যাকসন মারা গেলেন ব্রিটিশ তারকা সাইমন ফিশার ইন্ডাস্ট্রিকে থেকে তারা আমাকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল : গোবিন্দ ইফতারে যোগ দিয়ে তোপের মুখে বিজয় এবার ভারতীয় সিনেমায় দেখা যাবে হানিয়া আমিরকে ভারতের ফিল্মফেয়ারে মনোনীত হলেন বাংলাদেশি তিন তারকা ওমরাহ হজ পালন করতে মক্কায় বর্ষা উত্তোলন করা হলো তানজিন তিশার সহকারীর লাশ শ্রীপুরে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ, যুবক আটক অংশগ্রহণমূলক ভোটের পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাজ্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়েছে ঐকমত্য কমিশন আসামিদের পক্ষে দাঁড়াবেন না আইনজীবীরা মধ্যরাতে আদালতে চার আসামি রিমান্ড মঞ্জুর পাচারকৃত টাকা ফেরাতে আগামী সপ্তাহে নতুন আইন -প্রেস সচিব সাবেক ৬৪ সচিবের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে যাচাই করবে সরকার চোখের পাতা নেড়েছে সেই শিশুটি নিরাপত্তায় কঠোর হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার করারোপের আগে বাজার প্রভাব বিশ্লেষণ চান ব্যবসায়ীরা

অপরিবর্তিত আছে বেসরকারি ঋণ ও নীতি সুদহার মুদ্রানীতি ঘোষণা

  • আপলোড সময় : ১১-০২-২০২৫ ০৪:২৫:৩০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০২-২০২৫ ০৪:২৫:৩০ অপরাহ্ন
অপরিবর্তিত আছে বেসরকারি ঋণ ও নীতি সুদহার মুদ্রানীতি ঘোষণা
বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি ও নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রেখে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন, ২০২৫) মুদ্রানীতি (মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট-এমপিএস) ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের এবং বর্তমান গভর্নরের প্রথম মুদ্রানীতি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বছরে দুইবার (জানুয়ারি-জুন ও জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য) মুদ্রানীতি ঘোষণা করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, চলতি অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশ নামানোর লক্ষ্য ঠিক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও এখন মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি। নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি আগের মতো রাখা হয়েছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৭.২৮ শতাংশ। আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ৯.৮ শতাংশ নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৮.১০ শতাংশ। নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৭.৫০ শতাংশ লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। যদিও গত ছয় মাসে লক্ষ্য ছিল ১৪.২ শতাংশ। অর্থ্যাৎ ব্যাংক খাত থেকে সরকারকে ঋণ নেয়ার সুযোগ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন টাকা ছাপিয়ে (রিজার্ভ মানি) মুদ্রার সরবরাহ বাড়াবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। গত জুনে রিজার্ভ মানির প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৯ শতাংশ। ডিসেম্বরে এ প্রবৃদ্ধি কমিয়ে ২ শতাংশ নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করা হয়। নতুন মুদ্রানীতিতে আগামী জুন পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি কমিয়ে ১ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। বিশাল অংকের এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৪.৬ শতাংশ। বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল হিসাবে ব্যাংক খাত বেছে নেয়া হয়। ফলে বড় ঘাটতি পূরণে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেবে বলে লক্ষ্য ঠিক করেছিল বিগত সরকার। এদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিনিময় হার স্থিতিশীল করা এবং রিজার্ভ বাড়ানোকে প্রধান চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় গত বছরের ১৮ জুলাই চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা ছিল বিগত সরকারের শেষ মুদ্রানীতি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেওয়াজ অনুযায়ী সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হতো। কিন্তু রেওয়াজ ভেঙে সে সময় নজিরবিহীনভাবে কোনো সংবাদ সম্মেলন না করে শুধু ওয়েবসাইটে মুদ্রানীতির ঘোষণাপত্র দেয়া হয়। ব্যাংক খাতের বিভিন্ন অনিয়ম জালিয়াতির তথ্য আড়াল করতে তৎকালীন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার ধারাবাহিকতায় এমন পদক্ষেপ নেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর ৯ আগস্ট অজ্ঞাত স্থান থেকে ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে আত্মগোপনে আছেন সাবেক এ আমলা। নতুন সরকার গঠনের পর বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুরকে গভর্নরের দায়িত্ব দেয়া হয়। নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেয়ার সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর স্বল্পমেয়াদি ধারে ব্যবহৃত রোপোর সুদহার ছিল ৮.৫০ শতাংশ। তিন দফায় ৫০ বেসিস পয়েন্ট করে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে করে গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার বেড়ে এখন ১৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এরপরও মূল্যস্ফীতি না কমায় আরেক দফা নীতি সুদহার বাড়ানোর আলোচনা ছিল। তবে সর্বশেষ হিসাবে জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। এ কারণে আপাতত নীতি সুদহার বাড়ানো হবে না। অবশ্য বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বিবেচনায় সুদহার না বাড়িয়ে বরং কমানোর দাবি জানিয়ে আসছেন উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম ছয় মাসে অর্থনীতিতে বড় কোনো উন্নতি হয়নি; তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধারাবাহিক যে অবনতি হচ্ছিল, তা ঠেকানো গেছে। বিশেষ করে অর্থপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর নীতির কারণে আগের মতো আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে না। বরং দীর্ঘদিন ধরে তা ২০ বিলিয়ন ডলারে স্থিতিশীল আছে। গত বুধবার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০.২০ বিলিয়ন ডলারে। বর্তমান সরকার দায়িত্বে আসার আগে গত জুলাই শেষে যা ২০.৩৯ বিলিয়ন ডলার ছিল; ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে যা ওই পর্যায়ে নেমেছিল। গত ছয় মাসে বাংলাদেশ ৩৩০ কোটি ডলার আগের বকেয়া পরিশোধ করেছে। তারপরও রিজার্ভ একই জায়গায় থাকাকে আপাতত স্বস্তি বিবেচনা করা হচ্ছে। আবার ডলারের দর ১২২ থেকে ১২৪ টাকায় স্থিতিশীল আছে। এর মধ্যে স্বস্তির খবর নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে ৯.৯৪ শতাংশে নেমেছে। আগের মাস শেষে যা ছিল ১০.৮৯ শতাংশ। অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স